অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০২১ আয়োজন নিয়ে এখনও চূড়ান্ত ঘোষণা আসেনি। লেখক-প্রকাশক অনেকেই দ্বিধায় আছেন, বইমেলা আদৌ হবে কি না? এ নিয়ে লেখক-পাঠক ও প্রকাশকসহ সব মহলেই নানা রকম প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তবে বেশিরভাগ মানুষের প্রত্যাশা বইমেলা হোক।
এ বিষয়ে লেখক-পাঠকদের প্রত্যাশা কী? জানতে চাইলে খ্যাতিমান কবি আবু হাসান শাহরিয়ার বলেন, বইমেলা আমাদের জাতীয় উৎসব। আর, বিভিন্ন জাতির কেয়ারটেকার জাতিসংঘ। তাই, রাষ্ট্রের আরও আগেই উচিত ছিল, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার কাছে এই জিজ্ঞাসা উপস্থাপন করা। এখনও সময় আছে। অনুমতি না মিললে তো মিটেই গেল, মিললে কী কী নিয়ম মেনে এ আয়োজন সম্পন্ন করা যেতে পারে, তা জেনে নিয়ে, সেই মোতাবেক মেলা আয়োজন করা উচিত। প্রয়োজন নিয়মরক্ষায় কোনও প্রকার শৈথিল্য না-দেখানো।
তিনি আরো বলেন, জনসাধারণকে মেলার নিয়মাবলি বিষয়ে অবহিত করতে গণমাধ্যমের সহযোগিতা নেওয়া যেতে পারে। প্রকাশকদের সমিতির মাধ্যমে বাংলা একাডেমিকে এ ব্যাপারে জরুরি পদক্ষেপ নিতে বলাটাও জরুরি।
লেখক ও সাংবাদিক মেসবাহ য়াযাদ বলেন, বইমেলা ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে শুরু করে মার্চের শেষ পর্যন্ত হতে পারে। অথবা মার্চ পুরো মাস জুড়ে হতে পারে। সতর্কতার সঙ্গে হওয়া দরকার। মেলা না হলে প্রকাশনা শিল্পের সঙ্গে জড়িত হাজার হাজার মানুষদের খেয়ে পরে, বেঁচে থাকা অসম্ভব হয়ে পড়বে। করোনায় সীমিত আকারে সবকিছুই তো চলছে। মেলাও সেভাবে চালাতে হবে। তাছাড়া ফেব্রুয়ারির শেষের দিক থেকে গরম পড়া শুরু হয়। মার্চেতো পুরাই গরম। আর গরমে করোনার প্রকোপ কমে যাবে বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন।
সাধনা সাহা বলেন, আসলে বইমেলা হলো একটি প্রাণের মেলা, পাঠক, লেখক আর প্রকাশকের মিলনমেলা, জীবনের অন্তর্নিহিত কিছু চাওয়া-পাওয়ার মেলা। এই মেলার অপেক্ষায় হাজার হাজার বইপ্রেমী মানুষ একটা বছর অপেক্ষার বীজ বুনে চলে। আবেগে ভালোবাসায় আপ্লুত হয় পছন্দের বইটি হাতে নিয়ে। শুধু কি পাঠক? লেখক-প্রকাশকেরাও বুনে চলে স্বপ্নের বীজ। একটা ভালো বই পাঠকের হাতে তুলে দেবার আনন্দটা দু-চোখ ভরে দেখবার প্রয়াস মেটে এই মেলাতেই। তাইতো লেখক, প্রকাশকের স্বপ্ন পূর্ণতা পায় এ মেলাতেই। অতএব বইমেলা হওয়া দরকার।
দিদার মাসুদ বলেন, যথাসম্ভব সতর্কতা বা স্বাস্থ্যবিধির ব্যবস্থা রেখে এবং বাংলা একাডেমি চত্বরের বাইরে বিশাল এলাকা নিয়ে হলেও বইমেলা হওয়া উচিত। কারণ এ মেলা বইয়ের, এ মেলা ভাষার। লেখক কিংবা প্রকাশক কারোর কাছেই বইমেলাতে ছেদ পড়া কাঙিক্ষত নয়।
সেলিনা হাওলাদার বলেন, সব যখন চলছে তখন বইমেলা না হওয়ার কারণ দেখি না। সতর্কতা অবলম্বন করে যথাসময়েই মেলা করা উচিত।
এএনএন শামিমা বলেন, সময়টা হেরফের করে, দীর্ঘ পরিসরে, বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করে হলেও হওয়া উচিত।
তানজিমুল ইসলাম বলেন, একুশের চেতনা, বাংলা ভাষা-সাহিত্য-সংস্কৃতিকে টিকিয়ে রাখতে হলে একুশে বইমেলার কোনো বিকল্প নেই! কোনো অজুহাতেই এটি বন্ধ হওয়া উচিত নয়! নিউ নরমাল সিস্টেমে যেখানে সবকিছুই চলছে, অবাধ বিচরণ আর মানুষের উপচে পড়া ভিড় সবখানেতেই, সেখানে শৃঙ্খলা মেনে বইমেলা হতেই পারে। তাছাড়া, ফেব্রুয়ারি থেকে সব স্কুল-কলেজ যেখানে খুলতে যাচ্ছে, সেখানে বইমেলা হওয়াটা খুব স্বাভাবিক ব্যপার। আশা করি আমাদের সবার প্রত্যাশিত বইমেলা হবেই!
রাবেয়া বশির রুমি বলেন, বইমেলা হওয়া দরকার। সজল রায় বলেন, সহজ কথা-সতর্কতার মধ্যে দিয়ে হলেও বইমেলা হওয়া প্রয়োজন। মীনা ফারসাদ বলেন, বইমেলা হোক এটাই চাই। মালিহা তাবাস্সুম বলেন, মেলা হোক। শর্তসাপেক্ষ হোক, তবুও হোক। স্বপ্নীল ভট্টাচার্য বলেন, কিছু বাড়তি সতর্কতা মেনে বইমেলা হোক।
বদরুল আলম এর মতে, হিসাব-নিকাশ করে এগুনো ভালো। আরিফুর রহমান বলেন, বইমেলা হোক। ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৭ মার্চ পর্যন্ত। অবশ্যই বাড়তি সতর্কতাসহ।
মুনীরা ফেরদৌসী বলেন, সকলের সাথে একমত, যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করে- পরিধি বৃদ্ধি করে আয়োজন করা উচিত।
সুপ্রিয়া দেবনাথ বলেন, বইমেলা হোক এটা অবশ্যই চাই। তবে সময়টা বিবেচনায় রাখা উচিত। রবিউল হক বকশি এবং অনিদ্রিতা অনন্যার মতে, বইমেলা হওয়া প্রয়োজন।
—
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান ভাষাচিত্রের গ্রুপ ভাষাচিত্র বুক ক্লাবে উপরোক্ত মন্তব্য করেন লেখক-পাঠকগণ।
কপিরাইট © ২০১৭ - ২০২০ ।। বইদেশ-এ প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না
Design & Development by: TeamWork BD