করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় পূর্বঘোষিত ১ ফেব্রুয়ারি অমর একুশে বইমেলা শুরু হচ্ছে না। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে অন্তত দুই সপ্তাহ পেছানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। ফলে মেলা শুরু হতে পারে ১৪ বা ১৫ ফেব্রুয়ারি। মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে. এম খালিদ মেলার আয়োজক বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদাকে বিষয়টি অবহিত করেছেন।
তবে বিষয়টি নিয়ে একাডেমির মহাপরিচালক বলেছেন, বিষয়টি তিনি মৌখিকভাবে জেনেছেন। এ বিষয়ে কোনো লিখিত চিঠি তিনি পাননি এখনও।
বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির পরিচালক এবং আহম্মদ পাবলিশিং হাউজের স্বত্বাধিকারী মেজবাহ উদ্দীন আহম্মদ বলেন, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় থেকে আমরা মৌখিক নির্দেশনা পেয়েছি। কিন্তু বাংলা একাডেমি এখনও আমাদের নিশ্চিতভাবে কিছু জানায়নি। আমরা সমিতির পক্ষ থেকেও কোনো সিদ্ধান্ত নেইনি এখনও। সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় নিশ্চয়ই ভেবে-চিন্তেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা অবশ্যই সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। দুই সপ্তাহ পেছালে তা ঠিক আছে। কিন্তু যদি ফেব্রুয়ারির পরে মেলা করার সিদ্ধান্ত হয়, তবে অবশ্যই আমরা তা ভেবে দেখবো। কারণ ফেব্রুয়ারির পরে আর বইমেলা জমে না। মেলার স্পিরিটটা থাকে না। ঝড়-বৃষ্টি এসে যায়, নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ শুরু হয়। গতবারের অভিজ্ঞতা আমাদের আছে।
বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সহ-সভাপতি ও বইমেলা আয়োজন কমিটির সদস্য শ্যামল পাল বলেন, বাংলা একাডেমি বলছে মেলা আয়োজনের জন্য তাদের পূর্ণ প্রস্তুতি আছে। কিন্তু লক্ষণে তা দেখতে পাচ্ছি না।
এদিকে এই ঘোষণায় অসংখ্য প্রকাশকের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে অসংখ্য প্রকাশক তাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান পাললিক সৌরভ-এর প্রকাশক মেহেদী হাসান শোয়েব ফেসবুক স্ট্যাটাসে বলেন, “বইমেলায় সবচেয়ে বড় বিনিয়োগটা থাকে প্রকাশকদের। বাংলা একাডেমি বরং স্পন্সর থেকে নিরাপদে বেশ ভালো আয়ই করে থাকে। ফলে প্রকাশকদের চাওয়া অনুযায়ী সিদ্ধান্ত হওয়া জরুরি। অথচ কখনোই তা হয় না।
দেশের বিভিন্ন স্থানে নির্বাচন চলছে। গত বছরও এই সময়ে নির্বাচন চলছিল। সেসব স্থগিত বা পেছানো হয়নি। এবারও পেছানো হবে না। বাণিজ্য মেলা হচ্ছে, শেষ পর্যন্তই হবে। কিন্তু, বইমেলা সময় মতো হতেই যত আপত্তি।
বন্ধ হয়ে যাক সব শিল্পসাহিত্যসংস্কৃতিশিক্ষা চর্চা।”
উত্তরণ প্রকাশনীর প্রকাশক আহমেদ মাসুদ তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে বলেন, “অমর একুশে বইমেলা ধীরে ধীরে তার স্বকীয়তা হারাচ্ছে। ফেব্রুয়ারিতে যদি একুশে বইমেলা শুরু না করা যায় তাহলে এই মেলা না করা যুক্তিসঙ্গত হবে বলে মনে করছি।”
ইত্যাদি গ্রন্থ প্রকাশের প্রকাশক জহিরুল আবেদীন জুয়েল তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে বলেন, “১৫ ফেব্রুয়ারি বইমেলা!! তাতেও কি ফল ভালো হবে? অনিশ্চয়তায় ডুবে আছে এখনো!!”
এদিকে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বইমেলায় যারা স্টল পরিচালনা করবেন তাদের প্রত্যেকেরই দুই ডোজ টিকা থাকতে হবে। এছাড়া বইমেলায় পাঠকদের জন্যও এই দুই ডোজ টিকার বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে বলেও জানা গেছে।
কপিরাইট © ২০১৭ - ২০২০ ।। বইদেশ-এ প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না
Design & Development by: TeamWork BD