থ্রিলার লেখকদের আলোচনায় মুখরিত ছিল প্রথম কলকাতা থ্রিলার লিট ফেস্টের পঞ্চম দিন। এদিন আলোচনা পর্ব ছিল একটি। ‘পুরোটাই প্লটনির্ভর নাকি লেখক ও গোয়েন্দা হয়ে ওঠেন?’ বিষয়টির ওপর আলোচক ছিলেন ছয়জন থ্রিলার লেখক। কাজল ভট্টাচার্য, গৌতম মণ্ডল, সুদীপ ভট্টাচার্য, সৌরভ মুখার্জি, অভিষেক দেবরায় এবং দেবশ্রী ভট্টাচার্য। কথা সমন্বয়ে ছিলেন অভিজিৎ খাঁ।
আলোচনা দেবশ্রী ভট্টাচার্য বলেন, ‘অনেকটাই প্লটনির্ভর, কিছুটা হয়তো মাঝেমধ্যে প্লটের বাইরে যায়। তবে এটা তো গল্প, তাই প্লট ছাড়া সম্ভব নয়। লেখকের পক্ষে সত্যিই গোয়েন্দা হওয়া সম্ভব নয়। লেখকরা আগেই খুনি ঠিক করেন তারপর লেখেন। যদিও লেখাটা এমন করেই লিখতে হয় যেন পাঠক পড়ে মনে করেন বিষয়টা আগে থেকে ঠিক করা ছিল না।’
অভিষেক দেবরায় বলেন, ‘লেখককে গোয়েন্দামনস্ক হতে হয়। ইনকুইজিশন, অবজারভেশন, ইমাজিনেশন, রিজনিং এবং বিলিভ এই বিষয়গুলো গোয়েন্দা লেখকের প্রয়োজন। কিছু ক্ষেত্রে প্লট ভেঙে গল্পকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হয় প্রয়োজনে ‘
সৌরভ মুখার্জি বলেন, ‘বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বাংলা গোয়েন্দা গল্পে দেখা যায় গোয়েন্দার সহযোগী হলেন লেখক এবং লেখক সেখানে গোয়েন্দার থেকে বুদ্ধি কম নিয়ে উপস্থিত থাকেন। আমার লেখার শুরুতে প্লট একটা থাকে বটে, কিন্তু ডিটেলস এবং খুঁটিনাটি পরবর্তীতে যোগ হয়। খুনি বদলে যায় অনেকসময়। এছাড়া লেখককে তদন্তের যে প্রক্রিয়া সে বিষয়েও ওয়াকিবহাল থাকতে হয়।’
সুদীপ ভট্টাচার্য জানান, ‘বাঙালিবাড়ির বউ বা স্বামীদের থেকে বড়ো গোয়েন্দা কে আছে? জটায়ু না থাকলে কি ফেলুদা এতটা জনপ্রিয় হতো? রহস্য এবং রিলিফ একসঙ্গে। একেনবাবুতেও তাই। আমার ভেতরেও এটা কাজ করে। আমার গোয়েন্দাচরিত্রগুলোকে এভাবেই ভাবি।’
গৌতম মণ্ডল বলেন, ‘লেখক তাঁর গল্পে তিনিই ঈশ্বর। তিনিই নির্মাণ করেন ভালো খারাপ সকল চরিত্র। প্রথম ড্রাফটে হয়তো কাঠামোটা তৈরি হলো, দ্বিতীয় ড্রাফটে ঘটনার যুক্তিগুলোকে আরও একটু প্রমিনেন্ট করা হয়। পরবর্তী ড্রাফটগুলোতে গল্প আরও বেশি যৌক্তিক হয়ে ওঠে, প্রয়োজনীয় অদলবদল হয়। ফলে প্লট থাকলেও অনেক কিছু পরিবর্তনও হয়।’
কাজল ভট্টাচার্য বলেন, ‘মূলত নন ফিকশন থ্রিলার লেখক হিসেবে নিজেকে ভাবি আমি। এফবিআই ফাইল নিয়ে কাজ করতে গিয়ে লক্ষ লক্ষ পৃষ্ঠা পড়তে হয়েছে এফবিআইয়ের পাঠানো ডকুমেন্টস। আর ফিকশনের ক্ষেত্রে তথ্য দিলে সেটা কতটা দেবো এই পরিমাপ যথাযথ না হলে মুশকিল। লেখককে সতর্ক থাকতে হয় আজকের ইন্টারনেট যুগে যেন কোনো ভুল তথ্য লেখার মধ্যে ঢুকে না পড়ে। অথচ পুলিশি প্রসিডিয়োর ঠিকঠাক না জেনে অনেকে গল্প লিখে ফেলেন। আমি আমার প্রথম বইয়ের আগে সেই বিষয়ে সাতবছর পড়াশোনা করেছিলাম।’
অভিযান পাবলিশার্সের আয়োজনে এবং বিভা, অক্ষর সংলাপ, অভিনব মন প্রকাশনা, কলকাতা ক্রিয়েটিভ পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সহযোগিতায়
প্রথম কলকাতা থ্রিলার লিট ফেস্ট শতাধিক আলোচক ও ২২টি সেশনে ২৫ মে পর্যন্ত চলবে অভিযান বুক ক্যাফেতে।
[ বই-পুস্তক-প্রকাশনা এবং বুক ইন্ডাস্ট্রির যেকোনো সংবাদ প্রকাশের জন্য আমাদের ই-মেইল করতে পারেন : boideshnews@gmail.com ]
কপিরাইট © ২০১৭ - ২০২০ ।। বইদেশ-এ প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না
Design & Development by: TeamWork BD