দেশের বইয়ের একটি নিয়মিত আয়োজন পাঁচটি প্রশ্ন। লেখক-প্রকাশকের কাছে বই প্রকাশনাসংশ্লিষ্ট অভিজ্ঞতা নিয়ে প্রশ্নগুলো করা। আজকের পাঁচটি প্রশ্ন আয়োজনে আমরা মুখোমুখি হয়েছি তরুণ শিশুসাহিত্যিক– জনি হোসেন কাব্য-এর
প্রথম বই প্রকাশের অভিজ্ঞতা জানতে চাই।
দুর্দান্ত অভিজ্ঞতা। লেখালেখি-জীবনে এত অল্প সময়ের মধ্যে বই প্রকাশ হয়ে যাবে—ভাবতে পারিনি। এক বড় ভাইয়ের মাধ্যমে সম্ভব হয়েছিল সেটি। তখন গ্রামেই থাকতাম আমি। ‘ষোলোপৃষ্ঠা’ প্রকাশনী থেকে এসেছিল। ছড়ার বই। নাম ‘ছড়ার প্যাকেট’। মজার ব্যাপার হচ্ছে, আমার বইটিই ছিল প্রকাশনীর প্রথম প্রকাশিত বই। মেলায় বইগুলো যে স্টলে ছিল সে স্টলের সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়েছিল বইটি। আমার কাছে ব্যাপারগুলো স্বপ্নের মতো মনে হয়েছিল। মেলা শেষে বইটি হাতে পেয়েছিলাম আমি। প্রথম কয়েক দিন বালিশের পাশে বইটি রেখে ঘুমিয়েছিলাম। ঘুমানোর আগে ও ঘুম থেকে উঠে বারবার বইয়ের পৃষ্ঠাগুলো উল্টাতাম। দেখতাম। পড়তাম। আর মনে মনে ভাবতাম, আমার বই!
লেখালেখির ইচ্ছেটা কেন হলো?
আমার বড় ভাইয়া বই পড়তেন। ম্যাগাজিনও সংগ্রহ করতেন। সেসব ম্যাগাজিনে দেখতাম, আমার মত অনেক ছোট ছোট বাচ্চারাও লেখালেখি করে। তা দেখে ইচ্ছেটা জেগেছিল প্রথম।
লেখক জীবনের মজার কোনো অভিজ্ঞতা জানতে চাই।
অনেক মজার অভিজ্ঞতা আছে। এই মুহূর্তে যেটির কথা মনে পড়ছে— বইমেলায় এক পাঠক আমার একটি বই এগিয়ে দিয়ে বললেন, ‘অটোগ্রাফ চাই’। উপদেশমূলক একটি বাক্য লিখে—তার নিচে আমার নাম ও তারিখ লিখে দিলাম। উনি বইটি হাতে নিয়ে কিছুটা অবাক হলেন। আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘ভাইয়া, অটোগ্রাফ কোথায়?’ আমি আমার নামটি দেখিয়ে বললাম, ‘এই যে!’ উনি জবাব দিলেন, ‘এখানে তো সোজাসাপটাভাবে আপনার নাম লিখে দিয়েছেন। অটোগ্রাফ তো ঘুরিয়ে-প্যাঁচিয়ে লিখতে হয়। ওরকম একটা দিন না, প্লিজ!’
বাংলাদেশে সৃজনশীল লেখালেখির ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আপনার মতামত জানতে চাই।
বাংলাদেশে সৃজনশীল লেখালেখির ভবিষ্যৎ নিয়ে আমি খুব দ্বিধাদ্বন্দ্বে আছি। আমার মনে হয়, বর্তমান লেখকরা ঠিক সেভাবে পাঠকরুচির পরিবর্তন ঘটাতে পারছেন না। পাঠকরা ঠিক যে রুচিতে অভ্যস্ত হয়ে আছেন সেই ধাঁচের লেখার দিকে ঝুঁকছেন বেশিরভাগ লেখক। সম্প্রতি আত্মউন্নয়নমূলক বইয়ের একটা বাজার তৈরি হয়েছে। সে জন্য অনেক সাহিত্যিকই এ বিষয়টি নিয়ে বই করছেন। অথচ তাদের উচিত ছিল ভালো ভালো সাহিত্য রচনা করে পাঠককে সাহিত্যের প্রতি রুচি ফেরানো। আমার মনে হয়, সেই কাজটি খুব কমই হচ্ছে!
লেখালেখি নিয়ে আপনার ভবিষ্যৎ স্বপ্ন?
আমি খুব দূরের ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখি না। স্বপ্ন দেখি কাছের ভবিষ্যতের। মানে, যেটা হয়তো কয়েকমাসের মধ্যেই পূরণ হওয়া সম্ভব। ধরেন, আমি যখন লেখালিখি শুরু করি—তখন স্বপ্ন দেখতাম নির্ভুল ও ভালো লেখা রচনা করার। যখন মনে হলো এ কাজটি আমি পারছি মানে স্বপ্নটা পূরণ হয়েছে তখন স্বপ্ন দেখতাম লেখাগুলো ছাপা হবার৷ সেটা যখন পূরণ হলো তখন স্বপ্ন দেখতাম বই করার। সেটাও পূরণ হলো। এভাবেই আমার স্বপ্ন এগুতে থাকে। বর্তমানে স্বপ্ন দেখছি, সাহিত্যের বিভিন্ন শাখা নিয়ে ভালো ভালো কাজ করার, বই করার।
[ বই-পুস্তক-প্রকাশনা এবং বাংলাদেশের প্রকাশনা জগতের যে কোনো সংবাদ প্রকাশের জন্য আমাদের ই-মেইল করতে পারেন : boideshnews@gmail.com ]
কপিরাইট © ২০১৭ - ২০২০ ।। বইদেশ-এ প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না
Design & Development by: TeamWork BD