পাঁচটি প্রশ্ন

অগ্রিম টাকা না দিলে কাউকে আর পাণ্ডুলিপি দেবো না

বুধবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ | ৯:১২ অপরাহ্ণ | 1449 বার

অগ্রিম টাকা না দিলে কাউকে আর পাণ্ডুলিপি দেবো না

বইদেশ-এর একটি নিয়মিত আয়োজন পাঁচটি প্রশ্ন। লেখক-প্রকাশকের কাছে বই প্রকাশনাসংশ্লিষ্ট অভিজ্ঞতা নিয়ে প্রশ্নগুলো করা। আজকের পাঁচটি প্রশ্ন আয়োজনে আমরা মুখোমুখি হয়েছি তরুণ লেখক মাহমুদুর রহমান-এর


 

প্রথম বই প্রকাশের অভিজ্ঞতা জানতে চাই।
প্রকাশের অভিজ্ঞতা মিশ্র। কেননা, বই প্রকাশের ক্ষেত্রে অনেককে অনেক রকম শর্ত মানতে হয়। একাধিক প্রকাশকের কাছে ধর্ণা দিতে হয়। সেদিক দিয়ে আমি ভাগ্যবান। প্রথমে যে প্রকাশনীর সাথে যোগাযোগ হয়, তারাই বইটা ছেপেছিল। নিজের কোনো খরচ দিতে হয়নি। তবে এক্ষেত্রে বলতে হয়, যে বিষয়টা নিয়ে কাজ করেছি, ইতিহাস, সেটার উপযোগিতা ও যোগ্যতা ছিল বলেই সুযোগটা পেয়েছিলাম।
পরবর্তী সময়ে প্রচারণা, বই বিক্রি নিয়ে একটু-আধটু হতাশা কিংবা বিরক্তি কাজ করেছে। তবে সব মিলিয়ে যাত্রার শুরুটা বেশ ভালো ছিল।

 

লেখালেখির ইচ্ছেটা কেন হলো?
এই ‘কেন’র উত্তরটা দেয়া একটু কঠিন। আসলে নির্দিষ্ট কোনো কারণ নেই হয়তো। গুছিয়ে চিন্তা করার একটা অভ্যাস হয়তো ছিল। তাই সেই চিন্তা-ভাবনা লিখে ফেলার চেষ্টা একসময় করেছি। সেখান থেকেই শুরু।
আবার বলা যায় অনেক পড়তে গিয়ে নতুন নতুন ধারণা তৈরি হয়। সেগুলো জানাতে ইচ্ছা করে। সেই ইচ্ছা থেকে লেখার শুরু।
আসলে লেখার মধ্যে দিয়ে কিছু বলার চেষ্টা করি। অন্যের চিন্তার সাথে নিজের চিন্তার যোগাযোগ ঘটানোর চেষ্টা করি। এই আরকি!

 

লেখক জীবনের মজার কোনো অভিজ্ঞতা জানতে চাই।
একবার একজনের সাথে শাহজাহান-মমতাজের প্রেম, সম্পর্ক নিয়ে তর্ক হচ্ছিল। তো উনি আমাকে বললেন, আমার নাকি ইতিহাস আরও ভালো করে পড়া উচিত। কী পড়ব জিজ্ঞেস করার পর হুমায়ূন আহমেদ-এর ‘বাদশাহ্ নামদার’ সাজেস্ট করলেন।
বয়স বা অন্য যে কারণেই হোক, আমি যে ইতিহাস নিয়ে লিখি এটা অনেকে মানতেই পারে না। এগুলো হয়তো মজার না, কিছুটা ক্ষোভের কথা।
মজার কথা বলা যায় যে, একটা সময় বইমেলায় একা একা ঘুরতাম। এখন মেলায় গেলে চাইলেও একা ঘুরতে পারি না।

 

বাংলাদেশের সৃজনশীল লেখালেখির ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আপনার মতামত জানতে চাই।
বইয়ের বাজারে বিজ্ঞাপন নেই। একটা সময় পত্রিকার পাতা থেকে শুরু করে দেয়ালেও বইয়ের পোস্টার সাঁটানো হতো। এখনও হয় কিন্তু অত খরচ করা সবার পক্ষে সম্ভব নয়। বিজ্ঞাপন নেই বললাম, তবে সেটা আছে ফেসবুকের পাতায়। কিন্তু একটা নাটকের জন্যও যে পরিমাণ বিজ্ঞাপন দেয়া হয়, মানুষ আগ্রহী হয় তা দেখতে, বইয়ের বেলায় এমন নেই।
এটা বলার কারণ হলো আমাদের নাটক/সিনেমার চেয়ে বইয়ের জগতে অনেক বেশি এক্সপেরিমেন্ট হয়। অনেক ভালো কাজ হয়। কিন্তু সে সবের প্রচার না থাকার কারণে মানুষ জানতে পারে না, পাঠক তৈরি হয় না।
সামাজিক উপন্যাস বলেন, থ্রিলার বলেন, ননফিকশন বলেন, বহু ভালো লেখা আছে কিন্তু নির্দিষ্ট গণ্ডির বাইরে যায় না। এই প্রচারটা বাড়ানো হলে সৃজনশীল লেখালেখির ভবিষ্যৎ ভালো। তবে সেটা হবার মতো কোনো নমুনা আমি দেখি না।
পাশাপাশি দ্রুত জনপ্রিয়তা পাওয়ার চর্চাটাও ভালো না।

 

লেখালেখি নিয়ে আপনার ভবিষ্যৎ স্বপ্ন
অগ্রিম টাকা না দিলে কাউকে আর পাণ্ডুলিপি দেবো না। লেখালেখি নিয়ে এটাই পরিকল্পনা।

 


[ বই-পুস্তক-প্রকাশনা এবং বাংলাদেশের প্রকাশনা জগতের যে কোনো সংবাদ প্রকাশের জন্য আমাদের ই-মেইল করতে পারেন : desherboi@gmail.com ]

Facebook Comments Box

কপিরাইট © ২০১৭ - ২০২০ ।। বইদেশ-এ প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না

Design & Development by: TeamWork BD