দেশের বই ঈদ সাময়িকী

শাকেরা আহমেদ-এর দুইটি কবিতা

রবিবার, ০৮ মে ২০২২ | ৭:৪৮ অপরাহ্ণ | 264 বার

শাকেরা আহমেদ-এর দুইটি কবিতা

ভাষাচিত্র বুক ক্লাব আয়োজিত শুক্রবারের কবিতা শীর্ষক আয়োজন থেকে বাছাইকৃত কবিতা নিয়ে প্রকাশিত হচ্ছে “দেশের বই ঈদ সাময়িকী”। আজ প্রকাশিত হলো শাকেরা আহমেদ-এর দুটি কবিতা।


 

[১]
শূন্য স্থান

এভাবেই প্রিয়মুখ হারিয়ে যায়। এখন আর কেউ
নন্দিনীকে নিয়ে লেখে না কবিতা।
লেখে না কোনো শাহানা চৌধুরী
অথবা অন্য কোনো প্রিয়মুখ স্মরণে কোনো কিছু।
বয়স হেঁটে যাবে আসন্ন রাত্রির দিকে চোখ রেখে।
আকাশের মেঘ সরে যাওয়ার পর খুব দ্রুত
অন্য মেঘের জায়গা বদলের মতোন প্রিয় পত্রিকার
নির্বাহী সম্পাদকের পদ খালি হবে।
বিস্মৃতির চিহ্ন বুকে নিয়ে চলে যাবে সে,
আসবে অন্য কোনো সম্পাদক।
সেখানে আর সারাটা দিন ভরে আড্ডা দিবে না
কাজ আর কলেজফেরত একঝাঁক সাদা কালো পাখি।
সম্পাদকীয় লিখতে লিখতে তাকাবে না কেউ কখনো
খোলা দরোজায় কারো আসার প্রত্যাশায়।
নতুনত্ব আনার লক্ষ্যে আর কখনো এপাশ থেকে ওপাশে
ঘোরাবে না তার টেবিল-চেয়ার বিনা নোটিশে।
কেউ এসে হাইজ্যাক করে নিয়ে যাবে না
বনলতা অথবা সঙ্গীতা সিনেমা হলে। আর কখনো
হাত বাড়িয়ে অন্য কোনো উচ্ছ্বল নারীকে বলবে না-
‘এসো হাতে রাখ হাত। জীবনের গলিপথে
আরেকবার হাঁটা যাক দুইজনে মিলে।
দেখি জীবনকে ধরা যায় কি না।’ অথবা পড়বে না
কবিতা ‘জীবনের কাছে দায়বদ্ধ’ তারপর…
আরকি সেখানে ভরদুপুরে ঝংকৃত হবে
অন্য কোনো নারীকণ্ঠ, যেখানে
বহুদিন আগে কেউ হেসেছে, কেঁদেছে,
গেয়েছে গান, সাঁঝ-সকালে
অভিমানের রঙে রাঙিয়েছে হৃদয়। তখনও কি
এই কার্যালয়ের প্রতিটি ইট বালির কণা
মনে রাখবে এইসব কবিকণ্ঠঝরা অবিনাশী কবিতা?
নতুন প্রজন্মের কাছে ধীরে ধীরে বলে যাবে
এইসব ব্যস্ত বাউল-কবিদের বহুদিনের
টুকরো টুকরো আড্ডা, সাহিত্যসভা অথবা ভালোবাসার গল্প?
কালের সাক্ষী হয়ে সে কি কখনো বলবে না
কোন পাপে নীল সমুদ্রের বুকে ঝাঁপ দিয়ে
আত্মহত্যা করলো ব্যস্ত নদী ধলেশ্বরী!
যন্ত্রণার অগ্নিকুণ্ডে নিজেকে সমর্পণ করে
তখনও কি এই কার্যালয় বলবে-
কত মৌসুমী কবি এলো আবার চলেও গেল,
শুধু আমিই বসে আছি ঠুঁটো জগন্নাথ হয়ে।

 

[২]

ফাঁদ

তোমরা মরো বোমার ঘাতে
আমরা পেটের ভাতে।
যুদ্ধ টুদ্ধ লাগলো যখন
আমরা কেন বাদ?
সারা বিশ্বে যুদ্ধ লাগুক,
সবার পিঠেই চাবুক পড়ুক।
রক্ত গঙ্গা বইয়ে দিয়ে
সৃষ্টি হোক বরবাদ।
শায়েস্তা খানের দিন হয়েছে গত।
পাঁচ কিলো তেল আটশত,
দুইশো আশি ডিম। আজব দেশে
কে পেতেছে শুভঙ্করের ফাঁদ?
উন্নয়নের বইছে জোয়ার
আমার জন্য ওটাই খোয়াড়।
পড়েছি ঘোর সংকটে
সামনে শেয়াল, পেছনে খাদ।
আসবে কবে এমন দিন
সবার জীবন হবে রঙিন
কেউ পাবে না ক্ষুধার জ্বালা
শুনব না কেউ ক্ষুধিতের আর্তনাদ।

Facebook Comments Box

কপিরাইট © ২০১৭ - ২০২০ ।। বইদেশ-এ প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না

Design & Development by: TeamWork BD