পাঁচটি প্রশ্ন

সৃজনশীল সাহিত্য নিয়ে আমি শঙ্কিত : লিয়াকত বখতিয়ার

শনিবার, ২৩ জানুয়ারি ২০২১ | ১:৫৭ অপরাহ্ণ | 554 বার

সৃজনশীল সাহিত্য নিয়ে আমি শঙ্কিত : লিয়াকত বখতিয়ার

দেশের বইয়ের একটি নিয়মিত আয়োজন পাঁচটি প্রশ্ন। লেখক-প্রকাশকের কাছে বই প্রকাশনাসংশ্লিষ্ট অভিজ্ঞতা নিয়ে প্রশ্নগুলো করা। আজকের পাঁচটি প্রশ্ন আয়োজনে আমরা মুখোমুখি হয়েছি কবি ও সম্পাদক– লিয়াকত বখতিয়ার-এর


প্রথম বই প্রকাশের অভিজ্ঞতা জানতে চাই।

প্রথম বই প্রকাশের অভিজ্ঞতা বৈচিত্র্যময়।একটি বই বের করব, সে সাহস পাচ্ছিলাম না। কেউ বলে কবিতা হয় না। কেউ বলে অনেক সুন্দর। আমিতো আমার সব কবিতাকেই ভালোবাসি। বিশেষ করে আমার স্ত্রীর ভীষণ আগ্রহে বই করা। একদিকে বেকারত্বের অভিশাপ। অন্যদিকে কবি হবার তীব্র বাসনা। প্রকাশকদের নিকট ধর্না। প্রকাশকদের বই প্রকাশে অনিহা আমাকে বই প্রকাশে দ্বিধা-দ্বন্দে ফেলে দেয়।

শাহবাগ, বাংলাবাজারের অনেক প্রকাশকের নিকট ঘুরে ঘুরে ক্লান্ত হয়ে গেছি। বিনে পয়সায় কেউ বই করতে চায় না। সবাই টাকা চায়। সে সময় পনেরো হাজার টাকা অনেক টাকা। বই করতে হতো ১০০০ কপি। ততো টাকা আমার কাছে ছিল না। আমার ধারনা ছিল প্রকাশকরা নিজ খরচে বই করে। কিন্তু বাস্তবতা ছিল ভিন্ন। আরো ধরনা ছিল লেখককে সম্মানী বাবদ টাকা দেয়া হয়। কিন্তু বাস্তবে দেখলাম তাও সঠিক নয়। অবশেষে অনেকদিন বই প্রকাশ থেকে বিরত ছিলাম। পরে স্থানীয় এক প্রকাশকের আগ্রহে বই করলাম। প্রকাশের পর বইটিকে এতই ভালোবাসতাম যে, যেখানে যেতাম বই নিয়ে যেতাম। সকল বন্ধুদের এক কপি সৌজন্য দিতাম। সে দিনগুলো কষ্টের হলেও আনন্দ ছিল। জীবন ছিল মধুর। সম্পর্ক ছিল আন্তরিক।

 

লেখালেখির ইচ্ছেটা কেনো হলো?

ছোটবেলা থেকে পাঠ্যবই পাঠে অমনোযোগী ছিলাম। পাঠ্য বইয়ের বাইরে যা সামনে পেতাম তাই পড়তাম। ছোট বেলায় মানিক, তারাশঙ্কর, শরৎ এর বইগুলো পড়ে ফেলি। একটা সময় নিজের অজান্তে লিখতে শুরু করি। সেটা সম্ভবত ডায়েরির মতো করে। বন্ধুরা উৎসাহ দিতে থাকে। মূলত, প্রেমের চিঠি লিখতে লিখতেই এক সময় সাহিত্য জগতে প্রবেশ করি।

 

লেখক জীবনের মজার কোনো অভিজ্ঞতা জানতে চাই।

মজার ঘটনা নেই। তবে পাগলামীর ঘটনা প্রচুর। যেমন, ম্যাগাজিন করার জন্য উন্মাদ ছিলাম, ‘প্রতিভা’ নামে একটি ম্যগাজিনে হাত দিলাম। তখন কম্পিউটার ছিল না। একদিকে ফাইনাল পরীক্ষা, অন্যদিকে পত্রিকা প্রকাশের অদম্য ইচ্ছা। আমি পাগলের মতো পরীক্ষাকে অবজ্ঞা করে পরীক্ষার দিন ম্যাগাজিন বের করি, এবং পরীক্ষার হলে ১ ঘন্টা পরে প্রবেশ করি। সিকিউরিটি পুলিশতো পরীক্ষার হলে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না। ওরা মনে করেছিল আমি বহিরাগত। পরে আমার ক্লাস টিচারের সহায়তায় হলে প্রবেশ করি। আমার ফেল ছিল নিশ্চিত। ভাগ্য ভালো পরীক্ষায় পাশ করি। এ ঘটনা আমাকে আজো শিহরিত করে।

 

বাংলাদেশে সৃজনশীল লেখালেখির ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আপনার মতামত জানতে চাই।

সৃজনশীল সাহিত্য নিয়ে আমি শঙ্কিত। কিন্তু আশাহত নই। আমার বিশ্বাস কেউ না কেউ এগিয়ে আসবে, ভাণ্ডার আরো সমৃদ্ধ হবে।

 

লেখালেখি নিয়ে আপনার ভবিষ্যৎ স্বপ্ন?

আমাদের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্ব নিয়ে মৌলিক তেমন কোনো কাজ নেই। বেশির ভাগ লেখাই চেতনা বিরোধী। রাষ্ট্রের মূল বিষয়ের পরিপন্থী। তাই সে বিষয়ে কবিতা, গল্প, উপন্যাস এমন কি ছবি তৈরির চিন্তা রয়েছে।

 


[ বই-পুস্তক-প্রকাশনা এবং বাংলাদেশের প্রকাশনা জগতের যে কোনো সংবাদ প্রকাশের জন্য আমাদের ই-মেইল করতে পারেন : boideshnews@gmail.com ]

Facebook Comments Box

কপিরাইট © ২০১৭ - ২০২০ ।। বইদেশ-এ প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না

Design & Development by: TeamWork BD